, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ , ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


যেসব কারণে হারলেন হেভিওয়েট কাজী জাফর উল্লাহ্‌

  • আপলোড সময় : ১০-০১-২০২৪ ১০:৪৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০১-২০২৪ ১০:৪৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
যেসব কারণে হারলেন হেভিওয়েট কাজী জাফর উল্লাহ্‌
নাজমুল হাসান নিরব, ফরিদপুর প্রতিনিধি: একাধিক কারণে কাজী জাফর উল্লাহ্‌ হেরেছেন বলে মনে করছেন ফরিদপুর-৪ আসনের এলাকাবাসী ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ্‌ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েও হেরেছেন। এ আসনে ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর রহমান নিক্সন এর কাছে হেরে গেছেন তিনি। দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র নিক্সনের কাছে হেরেছিলেন তিনি, এবার গড়লেন তিনবার হারের রেকর্ড। একই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরপর তিনবার হেরে যাওয়ায় তাকে নিয়ে মুখরোচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এলাকায়।

এর আগে জাফরউল্লাহ ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তৎকালীন ফরিদপুর-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার স্ত্রী নিলুফার জাফর ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী এলাকা নম্বর ২১৪, ফরিদপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
 
এলাকায় না আসা, জনসম্পৃক্ততা না থাকা, নেতাকর্মী নির্ভর রাজনীতি, জনপ্রতিনিধিদের সাথে দূরত্ব তৈরী, করোনা মহামারী, বন্যা নদী ভাঙন ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাশে না থাকা, প্রতি নির্বাচনে একই ভুলের পুনরাবৃত্তির কারণে তার এমন পরাজয় হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মত হেরে যাবার পর কাজী জাফর উল্লাহ্‌কে এলাকায় তেমন দেখা যায় নি। বিশেষ করে করোনা মহামারীর সময়ে তিনি একেবারেই এলাকায় আসেন নি বলে এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ আছে। তাদের আরও অভিযোগ বন্যা, নদী ভাঙন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াননি তিনি। অথচ ঐ ইলেকশনে জয়ী হবার পর থেকেই তৃতীয়বারের জন্য মাঠ গোছাতে শুরু করেন নিক্সন চৌধুরী। করোনা মহামারীতে তিনি দ্বারে দ্বারে ছুটে গিয়েছেন। দরিদ্রদের জন্য টাকা ও খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন।  বন্যা, নদী ভাঙন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, এমন কি ধর্মীয় উৎসবগুলোতেও তিনি এলাকায় এসেছেন, ভক্তদের দান দক্ষিণা করেছেন।

কাজী জাফর উল্লাহ্‌ নির্বাচনী কাজে জেলা পরিষদ, তিন উপজেলা পরিষদ, ১ টি পৌরসভা ও ২৫ টি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে হাতে গোণা মাত্র কয়েকজনকে হাত করতে পেরেছিলেন যা তার নির্বাচনের ফলাফলে তেমন সাহায্য করেনি। অথচ এ কাজটি নিক্সন চৌধুরী খুব দক্ষতার সাথেই করেছেন। তার (নিক্সনের) নির্বাচনী জনসংযোগ, উঠান বৈঠক, জনসমাবেশে অধিকাংশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ চোখে পড়বার মত ছিল। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহাদাৎ হোসেন, তিন উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি ও হাই প্রোফাইলের নেতৃস্থানীয়দের তার (নিক্সনের) নির্বাচনী সফরে পাশে পেয়েছেন। নির্বাচন উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। এর বৃহত্তর অংশ নিক্সনের পক্ষে কাজ করে। এমনকি বিভিন্ন পেশাজীবীদেরও একাট্টা করতে পেরেছিলেন নিক্সন।

এবারে নির্বাচনে এই আসনে বড় কারিশমা ছিল তরুণ ও যুবক শ্রেণির অংশগ্রহণ। আর সেটা নিক্সনের গত ১০ বছরের পরিশ্রমের ফসল। মহিলা ও নতুন ভোটারদের তিনি আপন করতে পেরেছিলেন। এমন কি এলাকার ছোট ছোট শিশুদেরও নিক্সনের পক্ষে মাঠে নামতে দেখা যায়। স্থানীয় জাকের পার্টির বিশাল ভোট-ব্যাংকের সমর্থন আদায় করে নিয়েছিলেন নিক্সন। এই কাজগুলো কাজী জাফর উল্লাহ্‌ একদমই করতে পারেননি। যদিও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা হবার পর দুইবার পরাজিত কাজী জাফর উল্লাহর জয় পাওয়ার সম্ভাবনার গুঞ্জন তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বেশ চাউর হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেই সত্যকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারার কারণে তৃতীয় বারের মত পরাজিত হয়েছেন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।  
সর্বশেষ সংবাদ
শাহাবাগ-ঢাবি ক্যাম্পাসে গাড়িতে অপরিচিত মানুষ, সতর্ক অবস্থানে শিক্ষার্থীরা

শাহাবাগ-ঢাবি ক্যাম্পাসে গাড়িতে অপরিচিত মানুষ, সতর্ক অবস্থানে শিক্ষার্থীরা